Sunday, July 6, 2025

অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকের গ’লা চেপে ধরলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক

আরও পড়ুন

শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ওষুধ ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে শিকার হয়েছেন সময় টিভির শেরপুরের স্টাফ রিপোর্টার শহিদুল ইসলাম হিরা ও চিত্র সাংবাদিক বাবু চক্রবর্তী।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা বিষয়টি নিয়ে খবর না করার জন্য হুঁশিয়ার করেন। এসময় ক্যামেরা পার্সন ভিডিও করতে গেলে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন সেলিম মিঞা।

পরে তিনি সাংবাদিক হিরাকে শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরেন। পরবর্তীতে হাসপাতালের কর্মচারীদের ডেকে এনে তাকে দরজা বন্ধ করে ঘণ্টা খানেক অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিষয়টি অন্য সাংবাদিকরা খবর পেলে তাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার খবরে কৌশলে সটকে পড়েন তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা।

জানা যায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ওষুধ ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগে কম দরদাতাকে নির্ধারণ না করে বেশি দর প্রদানকারীদের দেয়া হয়েছে, এমন অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ করতে যায় সময় টেলিভিশনের সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় তথ্য চাইতে গেলে সাংবাদিকদের খবরটি না করার জন্য চাপ দেন তিনি। খবর করলে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক চেয়ার থেকে উঠে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় ঘটনা সম্পর্কে প্রমাণ রাখতে ক্যামেরা পার্সন ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন তিনি। পরবর্তীতে শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরে তাকে হেনস্তা করে ঘণ্টাখানেক আটকে রাখেন ওই সাংবাদিকদের।

আরও পড়ুনঃ  ধর্ষণের পর ভাতিজিকে হত্যার দায়ে চাচার মৃত্যুদণ্ড

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হিরা বলেন, ‘আমার সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একটি খবরের তথ্য সংগ্রহের জন্য হাসপাতালে যাই। যাওয়ার আগে অভিযোগের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে অভিহিত করি। এছাড়াও তথ্য সংগ্রহের জন্য হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহামুদুন্নবি সজলের সঙ্গে আমার নিজ মোবাইলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেই। বাইরের কাজ শেষ করে তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশের পর তথ্য চাইতেই তিনি খবর করলে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে তিনি সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডেকে দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এছাড়াও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন তিনি। পরবর্তীতে আমার শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরে আমাকে হেনস্থা করেন।’

আরও পড়ুনঃ  হঠাৎ করে কিসের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা: ডক্টর ইউনুস

এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং আমি একই পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাই তাকে নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। তবে ফুটেজে সাংবাদিকের ওপর হামলার স্পষ্ট দৃশ্য রয়েছে। আমি বিষয়টি ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শাহ আলি আকবর আশরাফীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি মিটিং আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

আরও পড়ুনঃ  পূজামণ্ডপে গীতা পাঠের ব্যাখ্যা দিলেন সেই জামায়াত নেতা

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল কাজ করছে। তবে এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে শেরপুর ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা সময় সংবাদকে বলেন, ‘নিউজটা করলে আমার ক্ষতি হতো, তাই তাকে আমি সরল বিশ্বাসে নিউজ করতে না করেছি। আর তাকে ভিডিও করতে বারণ করেছি। এছাড়া তেমন কিছু ঘটেনি।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ