Sunday, July 6, 2025

‘এই ভয়ংকর পাল্টাপাল্টি হামলা কেবল আরও মৃত্যু-বিপর্যয় ডেকে আনবে’

আরও পড়ুন

ইরান এবং এর অনুগামীদের সঙ্গে ইসরায়েলের এই ভয়ংকর পাল্টাপাল্টি হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে কেবল আরও প্রাণহানি এবং বিপর্যয় ডেকে আনবে। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত নিবন্ধে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক লিনা খতিব এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি সোয়াস মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং চ্যাথাম হাউসে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের সহযোগী ফেলো।

নিবন্ধে বলা হয়, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দুই দেশের মধ্যে সংঘাতকে ভয়াবহ মাত্রায় নিয়ে গেছে। ইসরায়েল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার কড়া ভাষায় জানিয়েছে, পাল্টা হামলার মধ্যে তেহরানের ওপর সরাসরি হামলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। যাই হোক, এই অঞ্চলে সংঘাতের সবচেয়ে সক্রিয় ফ্রন্ট এখনও ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সীমাবদ্ধ রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের দক্ষিণ লেবাননে আক্রমণ করার মধ্যে দিয়ে গত সোমবাব প্রথমবারের মতো সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয় প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ বাহিনীর সঙ্গে।

ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমা হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষনেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহতের পর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠ সংযোগের অর্থ হল লেবাননের সংঘাতে গভীরভাবে বিনিয়োগ করা। একই সময়ে, ইসরায়েল যদিও এই আগ্রাসনকে সীমিত এবং স্বল্পমেয়াদী স্থল অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করছে, এটি হিজবুল্লাহর সঙ্গে তার বিরোধকে উল্লেখযোগ্যভাবে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

আরও পড়ুনঃ  ডিবি থেকে নিয়ে ৯ তরুণ খুন

এদিকে, লেবাননের সঙ্গে আঞ্চলিক ফ্রন্টের আন্তঃসংযোগ দেশটির দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করবে, ইসরায়েলকেও।

হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক স্তরে আক্রমণের শিকার হয়নি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। ব্যাপকমাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের শিকার হয়েছে সংগঠনটি। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে, ইসরায়েল সংগঠনটিকে হাইব্রিড যুদ্ধের অধীন নিয়ে এসেছে, সেই সঙ্গে এর প্রধান সামরিক স্থাপনাগুলোকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং এর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করেছে।

হিজবুল্লাহর নিরাপত্তা, যোগাযোগ এবং সামরিক সক্ষমতা সবগুলো স্থরে মারাত্মকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও প্রতিবাদী থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংগঠনটি।

প্রকাশ্য বিবৃতিতে ইসরায়েল জোর দিয়ে বলেছে, দেশটির সশস্ত্র বাহিনী লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নয়, শুধুমাত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তবুও ইসরায়েলের এমন (সামরিক) পদক্ষেপ লেবাননকে অস্থিতিশীলতার দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ভারতীয় পররাষ্ট্রস‌চিবের ঢাকা সফর স্থ‌গিত

দেশটির অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীলতার কারণে লেবানন ইতোমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সংঘাতের কিনারায় চলে গেছে। একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এটিকে এই ধরনের বিবাদের প্রতি স্পর্শকাতর করে তুলেছে।

দেশটির রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব চূড়ান্ত করা হয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির ওপর ভিত্তি করে। তবে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পরিবর্তে, এই ব্যবস্থাটি কেবল ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য বিতর্কিত প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেয় দেশটিকে। অতীতে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ সহিংসতার শিকার হয়েছে দেশটি। এর শাসকগোষ্ঠী উদ্বিগ্ন যে নাসরুল্লাহর হত্যা এমন রাজনৈতিক সংঘাতকে আরও উসকে দিতে পারে। তার হত্যার পর তার লেবানিজ রাজনৈতিক বিরোধীদের বিবৃতিটি নাসরুল্লাহ সম্পর্কে সংযত বিবৃতিটি ছিল, যা সাম্প্রদায়িক সংঘাতকে উসকে দিবে না।

এরপর সোমবার দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি স্থল আগ্রাসন শুরু হয়, যা স্বল্প মেয়াদে লেবাননের বিভক্ত জনগণকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। এর কারণ হল স্থল সেনা নিয়ে ইসরায়েলের আগ্রাসন বিমান হামলা থেকে অনেকটাই আলাদা।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশে কেমন হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানার’ আঘাত

লেবাননের জনগণ ইসরায়েলি বাহিনীকে তাদের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করতে দেখে ফের ২০০৬ সালের মতো ক্রোধান্বিত হয়েছে। সেই বছর ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ তাদের শেষ সর্বাত্মক যুদ্ধ করেছিল। স্থল আক্রমণের মাধ্যমে ইসরায়েল হয়তো হিজবুল্লাহর চেতনা ও মনোবলকে ভেঙ্গে ফেলতে চেয়েছে। তবে এতে হিতে-বিপরীত হয়েছে। এমন হামলা আদতে লেবাননের জনগণ এবং জাতীয়তাবোধের চেতনাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

এমনকি লেবাননে হিজবুল্লাহর সবচেয়ে কট্টর বিরোধীরাও ইসরায়েলের আগ্রাসনকে মেনে নিতে পারেনি। এভাবে হিজবুল্লাহর কবজা থেকে ‘মুক্ত’ হওয়ার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী শিবির। তারা ইসরায়েলকে হানাদার বাহিনী হিসেবে দেখে। তাদের হাত দিয়ে এমন রাজনৈতিক মুক্তি তারা সমর্থন করে না। সম্পূর্ণ নিবন্ধটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ