Monday, June 30, 2025

চেয়ারম্যান-মেয়রের ন্যূনতম শিক্ষা*গত যোগ্যতা নির্ধারণ

আরও পড়ুন

পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সরাসরি ভোট হবে না। এসব পদে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে গ্র্যাজুয়েট (স্নাতক) বা সমমান। নিরক্ষর বা স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তিরা আর নির্বাচন করতে পারবেন না।

মতামত বিশ্লেষণ ও যাচাই-বাছাই করে এমন সুপারিশ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।

মাঠপর্যায়ে মতামত নেওয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) শেষ করেছে কমিশন। এখন চলছে সংকলন কার্যক্রম। এরপর আরেক দফা যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।

এ বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘সারা দেশ থেকে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, দল-পেশিশক্তি ও টাকাপয়সার কারণে শিক্ষিত লোকজন জনপ্রতিনিধি হতে পারেন না। নিরক্ষর লোকদের দাপটে সজ্জন, গুণী ও শিক্ষিতরা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। নিরক্ষর লোক যেন জনপ্রতিনিধি হতে না পারেন, শিক্ষিতরা জনপ্রতিনিধি হতে আগ্রহী হন এবং বিজয়ী হয়ে আসতে পারেন, এমনভাবে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  বেহাত বিপ্লবের মূল্য জীবন দিয়ে দিতে হতে পারে: হাসনাত আবদুল্লাহ

কিন্তু ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার কোনো মানদণ্ড সংবিধানে উল্লেখ নেই। ভোটে অংশগ্রহণে তাদের বাদ দেওয়ারও সুযোগ নেই। এ জন্য কমিশনকে কৌশলী হতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। আর ইউপি সদস্যরা ভোট দিয়ে একজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন। চেয়ারম্যানকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। তা না হলে তিনি চেয়ারম্যান হতে পারবেন না। একইভাবে ইউপি সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে সভাধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হবে। তাকেও স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  তেল কিছুটা কম মারেন, তেল কিছুটা কম মারেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা!

একই পদ্ধতিতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় সরাসরি ভোটে মেয়র নির্বাচিত হতে পারবেন না। কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে মেয়র ও সভাধ্যক্ষ নির্বাচিত হবেন।

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেয়রদের দায়িত্ব হবে সার্বক্ষণিক। ইউপি চেয়ারম্যানদের বেতন হবে উপজেলা পর্যায়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সমান। পৌরসভার মেয়রের বেতন হবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমান। সিটি করপোরেশনের মেয়রের বেতন হবে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপরে। চেয়ারম্যান বা মেয়রদের কেউ স্নাতক ডিগ্রিধারীর নিচে হতে পারবেন না।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের শাসনের অবসান হলে দেশব্যাপী সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা ও উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়নের দলটি থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে যান। পরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা ও উপজেলা পরিষদের সব প্রতিনিধিকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নহাল থাকেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। তবু যেসব চেয়ারম্যান পালিয়ে যান, সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়, আবার কেউ পদত্যাগ করেন।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়নে সম্মত কাতার

জনপ্রতিনিধিদের ব্যাপক পদত্যাগ, অব্যাহতি ও অপসারণের ফলে স্থানীয় সরকার সেবায় ব্যাপক শূন্যতা তৈরি হয়। এরপর দশটি সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। এর মধ্যে একটি হলো স্থানীয় সরকার কমিশন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এবারের পদক্ষেপকে স্মার্ট পদক্ষেপ বলে জনগণ প্রশংসা করছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ