Monday, June 30, 2025

ফোন রিসিভ কইরা কয় মাগো, বাবাগো, বাঁচাও!

আরও পড়ুন

গাজী টায়ার কারখানার প্রধান ফটকের সামনে প্রতিদিনই ভিড় করছে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা। সবার চোখে-মুখে হতাশা। কেউ আবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। স্বজনদের হারিয়ে ভুগছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

এমনই একজন মোসা. কল্পনা আক্তার। স্বামীকে হারিয়ে এখন প্রতিদিনই খুঁজতে আসেন আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজী টায়ার কারখানার ছয়তলা ভবনটির সামনে। অন্তত যদি মরদেহটি পাওয়া যায়, এমন আশায় বুক বেঁধে তাকিয়ে থাকেন সেই ভবনটির দিকে।

গত ২৫ আগস্ট দুর্ঘটনার দিন কল্পনার স্বামী মো. সজিব ভুঁইয়া তার নিজের জামদানি শাড়ির কারখানায় কাজ করছিলেন। তার সঙ্গে ছিল হেল্পার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনও। সাদ্দাম কিছু একটা বলেই হঠাৎ কারখানা থেকে বের হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী ব্যাংকে বহিরাগতদের গুলি, ৫ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ

তাকে খুঁজতে পেছন পেছন আসেন সজীব ভুঁইয়া। সে সময় গাজী টায়ার কারখানার ভেতরে চলছিল লুটপাট। হেল্পার সাদ্দাম হোসেন তখন লুটপাটকারীদের সঙ্গে সেই ভবনে ঢুকে পড়ে। এ সময় সাদ্দামকে খুঁজতে গিয়ে সজীব ভূঁইয়াও সেই ভবনে ঢোকেন এবং সেখানেই আটকা পড়েন।

এরপরও কয়েকবার ফোনে কথা হয় স্ত্রী কল্পনার সঙ্গে। কল্পনা বলেন, ‘ফোনে কয়েকবার কথা হয়েছে। সবশেষ তিনি বলেছেন, “আইতাছি।” এরপর আর ফোন রিসিভ করেন না। আবার ফোন দিছি, কতক্ষণ পর ফোন রিসিভ কইরা কয় “মাগো বাবাগো বাঁচাও।”—এ কথা বইলা ফোন হাতের থেকে পড়ে গেছে, আর কথা বলতে পারে নাই।’

আরও পড়ুনঃ  শাপলা গণহত্যার প্রস্তুতি টের পেয়ে যে পোস্ট দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া

বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে কল্পনা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে, বড় মেয়ে মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তিনি ফকির ফ্যাশন লিমিটেডে চাকরি করেন।

নিখোঁজদের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ড্রোন ও মই দিয়ে কর্মকর্তারা ভবনে দেখেছেন, কোনো মরদেহ তারা দেখেননি। এ ছাড়া এখানে অনেক বেশি কেমিক্যাল পুড়েছে, মরদেহ থেকে থাকলেও ওইভাবে পাওয়ার সম্ভবনা নেই। কারণ টানা ২১-২২ ঘণ্টা টানা আগুন জ্বলেছে। অথচ তির-চার ঘণ্টা আগুনে পুড়লে একটা মানুষ পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ার কথা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ