Wednesday, July 2, 2025

‘বিভাগের কলঙ্ক’ থেকে ‘বিভাগের গর্ব’— ছাত্রদলকর্মী সাইদুলের মাস্টার্সের ফলে মুগ্ধ সবাই

আরও পড়ুন

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তরে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৯৯ অর্জন করে বিভাগে প্রথম হয়েছেন ছাত্রদলকর্মী মো. সাইদুল ইসলাম। এর আগে স্নাতক পর্যায়েও প্রথম স্থান অধিকার করে পেয়েছেন একাধিক মেধাবৃত্তি।

সাইদুল ইসলাম গণিত বিভাগ থেকে স্নাতকে পেয়েছিলেন ৩.৮৫ সিজিপিএ এবং অনার্সে অর্জন করেন ‘মিরাজ আলী–আব্দুস সাত্তার মেধাবৃত্তি’। মাস্টার্সে প্রথম হয়ে পেয়েছেন ‘তারাপদ দে–মমতা দে মেধাবৃত্তি’। এছাড়া ফ্যাকাল্টিতে সেরা ফলাফলের জন্য তাঁকে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক এবং ডিন’স অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। গবেষণায় আগ্রহের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ (NST Fellowship)।

স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর নিজের অনুভূতি জানিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে সাইদুল ইসলাম লেখেন, ’আলহামদুলিল্লাহ। অনার্সের পর মাস্টার্সেও সর্বোচ্চ সিজিপিএ নিয়ে ফার্স্ট হওয়ায় ডিপার্টমেন্ট থেকে মেধাবৃত্তি ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। সম্মানিত শিক্ষক-মণ্ডলীসহ, শুভাকাঙ্ক্ষী সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভবিষ্যতের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।’

আরও পড়ুনঃ  ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ, হতাহতের পর পিছু হটতে বাধ্য হয় পদাতিক বাহিনী

তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় ছাত্রলীগের একক আধিপত্য ছিল এবং ভিন্নমতের রাজনীতির জন্য পরিবেশ ছিল প্রতিকূল। তবুও যুক্তিসঙ্গতভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিই। একাধিকবার ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়ার পাশাপাশি প্রথম বর্ষে এক আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে তিন মাস কারাভোগ করি, যার ফলে এক বছর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে।”

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘জেল থেকে মুক্তির পর এক শিক্ষক আমাকে ‘বিভাগের কলঙ্ক’ বলেন। তখনই প্রতিজ্ঞা করি, একদিন এমন কিছু করব যেন তিনি আমাকে ‘বিভাগের গর্ব’ বলে ডাকেন। সেই প্রতিজ্ঞা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হই। ফলাফল—অনার্সে ৩.৮৫, মাস্টার্সে ৩.৯৯—উভয় ক্ষেত্রেই বিভাগের সর্বোচ্চ সিজিপিএ।’

আরও পড়ুনঃ  বিএনপির সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন তামিম ইকবাল

শিক্ষা ও রাজনীতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে চলা এই শিক্ষার্থীর শৈশব কেটেছে সখিপুর উপজেলার চাকদহ গ্রামে। তাঁর পিতা শাহজাহান মিয়া ও মাতা সালমা বেগম। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। স্থানীয় মিরিকপুর গঙ্গাচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বাসাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। পরে ভর্তি হন মাভাবিপ্রবির গণিত বিভাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছাত্ররাজনীতিতে। বর্তমানে তিনি এমফিল অধ্যয়ন করছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী।

আরও পড়ুনঃ  আগের নিয়ম ফিরছে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা

ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় এই শিক্ষার্থী বেড়ে উঠেছেন বিএনপি-সমর্থক পরিবারে। তাঁর দাদা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। পরিবারের রাজনৈতিক ধারা ও বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব সাইদুল ইসলামকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত করে। তাঁর রাজনৈতিক লক্ষ্য—দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখা।

ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বিশ্বাস—সুস্থ, যুক্তিসংগত ও দায়িত্বশীল রাজনীতি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাঁর মতে, “একজন নেতা হওয়া উচিত সৎ, বিনয়ী ও দায়িত্বশীল। শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত নেতৃত্বের পরিচয়।”

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ