Monday, June 30, 2025

‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, সেই আমার সন্তানকে ৪ খণ্ড করল’

আরও পড়ুন

‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি; সেই আমার সন্তানকে হত্যা করল? সেটা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার সন্তানকে না মেরে আমাকে মারত। এসব কথা বলতে বলতে রোববার রাতে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার একটি কক্ষে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন নিহত ওমর ফারুক সৌরভের (২৪) বাবা ইউসুফ আলী।

উল্লেখ্য গতকাল রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা সেতুর নিচ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভের ৪ খণ্ড করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী বলেন, তার কী এমন দোষ ছিল? শুধু কী আমার ছেলেই তোর মেয়েকে ভালোবেসেছে, তোর মেয়ে কী ভালোবাসে নাই। যদি তোর মেয়ে ভালো নাই বাসত তাহলে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় গিয়ে কেন আমার ছেলেকে বিয়ে করল?’

আরও পড়ুনঃ  টেকনাফ গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী আল ফাহাদ প্রকাশ আল ফরহাদ’কে র‌্যাব-১৫ এর আটক

ইউসুফ আলী আরও বলেন, ‘ইলিয়াস আলী আমার ছোট ভাই; আর ভাইদের মধ্যে তাকেই আমি বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। আজকে আমার ছেলেকে চার খণ্ড করে হত্যা করে প্রতিদান দিয়েছে। ৪-৫ বছর ইশরাত জাহান ইভার সঙ্গে প্রেমের পর গত ১২ মে তাকে বিয়ে করে। সে বিয়ে আমিও মেনে নেইনি; কিন্তু ছেলে-মেয়েরা তো ভুল করতেই পারে? বিয়ের পরপরই ইলিয়াস বিভিন্ন সময় আমাদের কল করে হত্যার হুমকি দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘১৬ মে নিজের মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দিয়ে সৌরভকে হত্যার ছক আঁকে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সৌরভকে কৌশলে ডেকে ময়মনসিংহে আনে, সৌরভ আমাদের কিছু না বলেই চলে আসে। পরে ওই দিন রাতে শুনতে পাই সে ময়মনসিংহে। কিন্তু রাত ১১টার পর যখন সৌরভের মোবাইল বন্ধ পাই, তখন থেকেই চিন্তা হচ্ছিল। পরে সকালে শুনি মনতলা ব্রিজের নিচে সৌরভের চার খণ্ড মরদেহ পাওয়া গেছে; কেন আমার ছেলেটাকে এভাবে হত্যা করল?

আরও পড়ুনঃ  দাফনের পরই কবর থেকে লাশ উধাও, এলাকায় আতঙ্ক

শুধু ইউসুফ আলী নয় একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার মা মাহমুদা আক্তার পারুল যেন কোনো কথাই বলতে পারছিলেন না।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে; যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পারিবারিক বিরোধের কারণেই সৌরভ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।’

এদিকে নিহত ওমর ফারুক সৌরভের মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন ইলিয়াস আলীর পুরো পরিবার।

আরও পড়ুনঃ  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডিআইজি হারুন?

ইলিয়াস আলী ময়মনসিংহ নগরীর গোহাইলকান্দি একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি সেনবাহিনীর নায়েক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান। আর ইউসুফ আলী পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি ডাক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি এলাকায়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ