Thursday, July 3, 2025

‘আব্বা আন্দো*লনে আছি, বিজয় নিয়েই ফিরবো’

আরও পড়ুন

‘আব্বা আমি আন্দোলনে আছি, এই মুহূর্তে আসতে পারবো না। বিজয় নিয়েই বাসায় ফিরবো। বাঁচলে বীর, মরলে শহীদ’। এটাই ছিলো বাবা শফিকুল ইসলামের সঙ্গে শহীদ তানজিল মাহমুদ সুজয়ের শেষ কথা।

সুজয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের শফিকুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। গাজীপুর ভাওয়াল সরকারি বদরে আলম কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আশুলিয়া থানার অদূরে একটি ভাড়া বাসায় সুজয় তার বাবার সাথে থাকতেন। ছোট ২ বোন এনি ও স্বর্ণাকে নিয়ে মা তাহমিনা থাকতেন গ্রামের বাড়িতে। বৈষম্যবিরুধী আন্দোলনে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন সুজয়।

আরও পড়ুনঃ  সম*ন্বয়কের বাড়ির দেয়ালে লেখা ‘মৃ*ত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও’

প্রতিদিনের মতোই ৫ আগস্ট যোগ দেন আন্দোলনে। দুপুরের পর থেকে সারা দেশ যখন বিজয় উৎসব পালন করছে ঠিক সেই সময়ে বিকেলে উল্লাসিত জনতার মিছিলে গুলি চালায় সাভারের আশুলিয়া থানা পুলিশ। গুলিতে বাইপালে শহীদ হন তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯), পরে পুলিশ তার মরদেহ ভ্যান গাড়িতে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্র জানায়, আশুলিয়ার ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লিমিটেডের অফিসার ফ্যামিলি কোয়াটারের দেয়াল ঘেষে গুলিবিদ্ধ সুজয়সহ ১১ জন শিক্ষার্থীর মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। পরে পুলিশ সদস্যরা লাশগুলো একত্রিত করে ভ্যানের ওপর স্তুপ করে রাখে। লাশগুলো থানায় পার্ক করা একটি পিকআপে তুলে আগুন দিয়ে থানা থেকে পালিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। সেদিনের পৈশাচিকতার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ  জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে কেন শামিল হয়েছিলেন, ছাত্রদলকে প্রশ্ন হাসনাতের

সুজয়ের বাবা বলেন, সুজয় মিছিলে থাকা অবস্থায় আমার সাথে মোবাইলে শেষ কথা হয়। বাসায় চলে আসার কথা বললে তখন সুজয় আমাকে বলে, আব্বা আমি আন্দোলনে আছি, এই মুহূর্তে আসতে পারবো না। বিজয় নিয়েই বাসায় ফিরবো।

বাঁচালে বীর,মরলে শহীদ, এরপর বেলা ৩টার পর ছেলেকে ফোনে না পেয়ে বিভিন্ন হাসপাতালসহ সম্ভব সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। ওইদিন তার সন্ধান মিলেনি। পর দিন অগ্নিদগ্ধ থানার পিকআপ ভ্যানের লাশের স্তুপ থেকে তাকে সনাক্ত করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  সুমনকে হ*ত্যা করে যুবলীগের সন্ত্রা*সীরা

একমাত্র ছেলে সন্তানের এমন মৃত্যুতে পাগলপ্রায় সুজনের মা। তিনি বলেন, কত স্বপ্ন ছিল, আমার সুজয় পরিবারের হাল ধরবে, বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন হৃদয়বিদারক হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করেন তার স্বজনরা। ৭ আগস্ট (বুধবার) সকাল ৯ টায় নিজ বাড়ি নবীনগরের বিটঘর কবরস্থানে সুজয়ের লাশ দাফন করা হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ